সমস্ত লেখাগুলি

একটা কাঠ ও আমি: কথোপকথন ১ -
অমিত দাস
May 19, 2025 | গল্প | views:8 | likes:4 | share: 0 | comments:0

আমি: আচ্ছা, এই যে কাঠের টুকরো, আপনি মাটিতে পড়ে আছেন। আপনার সঙ্গে কিছু কথা বলতে চাই। মতামত চাই। 

কাঠের টুকরো: (No response)

আমি: তাহলে কথোপকথন এগোবে না? আপনি কি অনিচ্ছুক?

কাঠ: (no response)

আমি: ৬-৭ বছর আগের কথা। আমার কিছু কিছু বন্ধু, যখন আমরা একসঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানে পড়তাম, জিজ্ঞেস করত— ‘তুই হস্তমৈথুন জানিস না। ওই শোন অমিত এখনও বাচ্চা আছে, ও ঐ জিনিসটা কী জিনিস জানে না।’’ আমি কেন জানতাম না তার কারণ হয়তো দীর্ঘকাল সেই সব দৃশ্য মানসিকতা থেকে আমি সম্পূর্ণ নিজেকে আলাদা করে নিয়েছিলাম। কারণ আমার বন্ধু বৃত্তে আমি একাই ছিলাম, কলেজে ক্লাসের রীতি না থাকায় নিজের গ্রাম্য ও অশিক্ষিত অপরিণত মানসিকতা কখনও বৃহত্তর ক্ষেত্রে যোগ হওয়ার সুযোগ পায়নি। নিজের মনে নিজেকে প্রদক্ষিণ করতাম। সেই দুটো জ্যামিতিক চৌম্বক ক্ষেত্রের তৈরি বায়বীয় ফ্যান্টাসিগুলো তখন নিজের নিয়মেই ঝরে যেত। যাইহোক এখন আমি সেটা জানি। আরও বিবাহিত বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে, নানা তথ্যসূত্র দেখে জেনেছি, স্বাভাবিক নারী-পুরুষ একটা বিশেষ সময়ে মিলিত হলে, পরবর্তীকালে সন্তানের  কামনা বা আগমন বাস্তবায়িত হয়।


তার থেকেও বড় ব্যাপার, গর্ভে সন্তান এলে ধারণকারী তা টের পান ও  সেই বিকশিত হতে থাকা মানবপ্রাণের উপস্থিতি ধীরে ধীরে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে সবাই বুঝতে পারেন। তার মানে ১) কেউ আসবেন সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পূর্বপরিকল্পিত, কারণ কী করলে কী হয় সেটা সম্ভবত প্রায় মধ্যযুগের আগে থেকে মানুষ জানে। ২) যখন সবাই বুঝতেই পারেন যে কেউ আসছেন এবং আপনি ইচ্ছে করলে সেই আশা সম্ভাবনাকে একটা নির্দিষ্ট সময় অনুসারে আইনত কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে আটকাতে পারেন তখন নিশ্চয়ই সেই মানবপ্রাণের আগমনের আসা না আসা আপনার হাতে।


কাঠ: (no response)


আমি: যদি সেক্স করার ইচ্ছে ও পদ্ধতি নরনারীর হাতে থাকে, তাহলে যারা পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়নি কিংবা অপরিণত ভাবে মৃত্যু ঘটেছে আগেই (ধরলাম কথা শেখার আগেই), তারা কি কখনও সর্বশক্তিমান/XYZ/স্রষ্টা ইত্যাদি হাবিজাবির কল্পনা করে যুক্তি, অ-যুক্তি কুযুক্তির ইমারত তৈরি করছেন? কাঠবাবু আপনি কী বলেন?


আচ্ছা যার প্রাণ নেই, যে আদৌ পৃথিবীতে আসেনি, কিংবা প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপায়ে করা সেক্স ছাড়াই ভূমিষ্ঠ এমন কোনও মানব শিশু আছে কি যে আমার এই লেখা পড়ে প্রতিক্রিয়া স্বরূপ কিছু লিখতে বা সাড়া দিতে পারে? থাকলে একটু জানাবেন প্লিজ। ও,  আর কাঠবাবু আপনার কাছে স্রষ্টা/সর্বশক্তিমান/XYZ এসবের ব্যাখ্যা কী? কিংবা যদি কোনও কেউ থেকে থাকে একটু নামটা জানাবেন প্লিজ! 


কাঠের টুকরো: (no response, যেমন মাটিতে পড়েছিল তেমনি আছে)

আমি: ধুর, সময় নষ্ট করলাম।

কাঠের টুকরো: (no response, যেমন মাটিতে পড়েছিল তেমনি আছে)

মার্ক্সিজম ও গণচৈতন্য -
অমিত দাস
Nov. 16, 2024 | মার্ক্স | views:269 | likes:23 | share: 0 | comments:0

 ''সমাজে যুক্তি অযুক্তিকে রেখেছে কিনারায়।''-- ফুকো 

 প্রকৃত গণজাগরণ কীভাবে সম্ভব? যেকোনো মুহূর্তে ঘটনাপ্রবাহের জনআন্দোলন রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে পারে একথা ঠিক, কিন্তু সাময়িক চমক তো একজনকে সচেতন সমকালীন বানায় না, তাই শক্তিশালী উত্তরাধুনিক গণচেতনার উদ্দেশ্যে আমাদের সামাজিক রাষ্ট্রীয় বা নানা অ-সরকারী ব্যক্তি বা সমষ্টির কর্মপ্রকৃতি ও ক্রিয়া  কীরকম হওয়া উচিত ?

                  আচ্ছা , এই যুক্তি-অযুক্তি ,কারণ-অকারণ , একমুখীনতা বহুমুখীনতা ,একককথন-দ্বিরালাপ সম্পর্কে যারা সচেতন তারা তো সত্যিকারেরই সমাজের কিনারায় থাকে। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের নানা স্তরের মানুষ এক-এক পরিসরের জামা-জুতো পরা , সেখানে দুই একজন সচেতন মানুষ দেশীয় 'বোরোলিন' মাখলেও '৪৭ফ'রা তো 'ফেয়ার এ্যান্ড লাভলি'র দলেই। আর রাজনৈতিকতন্ত্র পরিবর্তনে তাদের ভূমিকাই বেশি। কিন্তু প্রশ্ন হল এবার কীভাবে ? মানুষ যে গাছের পাতা দেখে হাওয়ার অস্তিত্ব অনুভব করবে,সে ক্ষমতাও খুব কম মানুষের আছে।

                'আত্মা' শব্দটি নিঃসন্দেহে খুব ভালো শব্দ-- 'আত্ম' যা তা-কে  নির্দেশ করে,কিন্তু এখন দূষিত, তাই ব্যবহৃত হয় 'আমি'।জ্ঞানরাজ্যে 'ধর্ম' দূষিত, তাই শিল্পের ধর্ম হয়েছে 'ময়ূরাক্ষী' ,'সুবর্ণরেখা' ইত্যাদিরা। এরা নিরাপদ, কিন্তু একটা পার্টির মাথাকে জল দিয়ে স্নান করানো এবং আদর্শবীজগত 'ধুলোমাখা ' টোটেমগুলিকে নবায়ন একদিকে যেমন প্রয়োজন অন্যদিকে বিপদ। লক্ষ করি ,এই নতুন শব্দেচেতনার আকর্ষণেই  রাজনৈতিক মুখোশের  পতন-অভ্যুত্থান অথবা রূপান্তর হয়েছিল-হয়, হয়ত হবেও। কারণ শব্দ জ্যান্ত,শব্দ তার বহুমুখীশক্তি অনুযায়ী মানুষকে সচেতন করে। রোঁলা বার্থ-এর 'ডেথ অফ্ দা অথর' প্রয়োগ করলে এই তত্ত্ব ---সমাজের হৃদস্পন্দন যে সমষ্টি--এবং সেই সমষ্টির হৃদস্পন্দন যে কিছু বাণী ,তা প্রমাণিত হয় ।

                           এবার কীভাবে ? সোভিয়েত ইউনিয়ন কিন্তু ভেঙে গেছে ঠিক এই কারণেই--এ কথা মনে রেখেই--পোস্ট-মার্ক্সসিস্টরা বলে ,শোষণপোষাক পরিবর্তিত হয়েছে, আধেয় নয় ,উপেয় নয়।ফুকোর  সেই আধুনিক  'কারাগার-থিওরি'(†ছবি)-তো সেই কথাই বলে।তবে ?

                 মার্কসের বন্ধু এঙ্গেলস  ,'পরিবার, ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি’তে লিখেছিলেন--এক সময় নারীপুরুষ জঙ্গলে অনেকটা একই রকম কাজ করত পরবর্তী সময়ে এক ব্রাহ্ম-মুহূর্তে যখন নারী বুঝতে পারল তার পেটের এক অংশে কিছুটা ভারী হয়ে উঠছে এবং সে কোনো কাজ করতে পারছে না , তখন মন ও কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-মিথস্ক্রিয়ায় জন্ম নিল প্রথম সমাজ ব্যবস্থা। তারপর নানা তন্ত্র শেষে আজ 'এক' তন্ত্রে আমরা আছি। প্রশ্ন হল এই যে বিবর্তন ...তার উৎসেও বিমূর্ততা এসে দাঁড়াচ্ছে। যেখান থেকে অধিবিদ্যা যেখান থেকে অসংখ্য পাঠকৃতি তৈরি হচ্ছে--এদিকে সমষ্টিমানুষের জন্য প্রয়োজনের বস্তুধর্মিতা ছাড়া পথ নেই ---আবার যে উত্তরআধুনিক সমকাল তা দাবি করছে বিকেন্দ্রীভূত বহুমাত্রিকতা।

                   ক্ষমতার পিরামিডের সঙ্গে এই কনসাসনেস পিরামিডের উচ্চে (মানুষিক দৃষ্টিকোণে) অবস্থানকারী ব্যক্তিগণ লড়ে হেরে বা জিতে যে-ভাবেই হোক সমকালীন রাজনৈতিকশক্তিকে প্রভাবিত করতে পারেনি--ধরা যাক কোনো এক পার্টির পূর্বের বা বর্তমানের শাসন ব্যবস্থা প্রকৃতই জনমুখী এবং জীবনমুখী সমাজতান্ত্রিক ছিল বা আছে-- যদি তাই হয় তাও তো 'ভালোর' ভালোকে স্বীকার করতে গিয়ে স্বহৃদয় সামাজিক মানুষটি ফেঁসে গেছে, কারণ উত্তরাধুনিকতা বলে ''হেগেলের চিন্তাও বায়াসডহীন নয়, কারণ হেগেল চিন্তা-চর্চা করার জন্য রাজনৈতিক সাহায্য পেয়েছিলেন।'' রাজনৈতিকবোধ ছাড়া কোন মানুষ আধুনিক বা উত্তরাধুনিক হতে পারে না--আবার সম্পূর্ণ রাজনৈতিকবোধে বা স্রোতের শক্তিতে প্রভাবিত হলেও  সত্য অনেক দূরে চলে যাবে.? অনেকে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বলবে কিন্তু বহুমুখীনতা স্বীকার করলে--পরস্পর বিপরীতমুখী  কর্মকাণ্ড হওয়া স্বাভাবিক , এবং তা প্রয়োজনও। এবার প্রশ্ন হল জনগণ কীভাবে তা গ্রহণ করবে? আবার জনগণ সমকালীন না হলে তাও আরেক সমস্যা? শাসকদলের দাসত্ব করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না‌ --যেমন এখন চলছে।

                    তাহলে এই গণমানসে প্রকৃত 'গণজাগরণ' কীভাবে সম্ভব? নাকি সেই সময়ের কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আবার নতুন কোন ইজম এসে হাজির হবে?

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86930